অসুস্থ ব্যক্তিকে জরাজীর্ণ মন্দিরের মেঝেতে রেখে দেখা নেই পরিবারের, এমনই অমানবিক চিত্র রাজগঞ্জের মনুয়াগজে।
নিজস্ব সংবাদদাতা,রাজগঞ্জ: অমানবিক মুখ দেখলো রাজগঞ্জ। অসুস্থ অসহায় স্বামীর ঠাঁই হলো পরিত্যক্ত একটি মন্দিরের মেঝেতে। মেঝেতে শুয়ে অসুস্থ সুভাষ চক্রবর্তী বলেন, এক সময় এ এলাকায় তিনি বসবাস করতেন। বেশ কিছুদিন আগে জমিজমা বিক্রি করে কয়েক লক্ষ টাকা স্ত্রীকে দেন। জলপাইগুড়ির বউবাজার এলাকায় থাকতে শুরু করেন তিনি। এরপর কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন।অসুস্থ হয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা হওয়ার পর বর্তমানে তিনি ভালোভাবে হাঁটতে পারেন না। জানা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে হরিহর আশ্রমে একটি ঘরে থাকতেন তিনি। সেই সূত্র ধরে স্ত্রী এবং কন্যা তাকে একজন লোকের সাথে পাঠিয়ে দেন সেখানে। বর্তমানে সেখানেই জরাজীর্ণ মন্দিরের মেঝেতে শুয়ে আছেন সুভাষ চক্রবর্তী। জানা গিয়েছে সুভাষ বাবুর স্ত্রী অতসী চক্রবর্তী সেরিকালচার দপ্তরে অস্থায়ী কর্মী, তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। সে জলপাইগুড়িতে গৃহ শিক্ষকতার কাজ করে।
এই প্রসঙ্গে সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী অতসী চক্রবর্তী বলেন, প্রায় ৭-৮ বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে থাকছি না আমি। তার সঙ্গে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন কোন টাকা পয়সা তিনি আমাকে দেননি। সুভাষ বাবু তার উপর দারুণভাবে অত্যাচার করতেন যার জন্য তিনি সম্পর্কে বিচ্ছেদ করেছেন। বর্তমানে জলপাইগুড়িতে একটি জায়গায় ভাড়া থাকেন। তার সংসার চলছে না তবুও স্বামী অসুস্থ থাকার সময় কিছুদিন তার দেখাশুনা করেছেন। বর্তমানে তার পক্ষে আর সম্ভব নয় তাই পাঠিয়ে দিয়েছেন ।
সুভাষ বাবুর এই অবস্থা দেখে প্রতিবেশীরা কষ্ট পেলেও নিজের স্ত্রী ও মেয়ে জরাজীর্ণ এই আশ্রমে মন্দিরে রেখে যান তার পরিবার। কয়েকদিন আগেও এভাবেই সুভাষ বাবুকে তার পরিবারের সদস্যরা এই আশ্রমে রেখে গেলে এলাকার কয়েকজন মিলে মোগরাডাঙ্গা গ্রামীণ হসপিটালে ভর্তি করে। শোনা যায় পরবর্তীতে পরিবারের লোক হসপিটালে যারা ভর্তি করেছিল সুভাষ বাবুকে তাদের বিভিন্নভাবে ধুমকি দেয়।
অসুস্থ অবস্থায় নিজের স্বামীকে পরিত্যক্ত মন্দিরের মেঝেতে ফেলে রেখে কিভাবে থাকতে পারেন একজন স্ত্রী ও মেয়ে,এই নিয়ে প্রশ্ন করছেন মনুয়াগজ এলাকার এলাকাবাসী।