ISRO-এর অরবিটাল ‘ডগফাইট’: মহাকাশ অভিযানে এক যুগান্তকারী মাইলফলক


ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO আবারও প্রমাণ করল যে তারা শুধু উপগ্রহ উৎক্ষেপণেই নয়, মহাকাশ প্রযুক্তির পরবর্তী প্রজন্মের চ্যালেঞ্জও সামাল দিতে সক্ষম। বর্তমানে ISRO একটি অতি উন্নত ও কৌশলগত বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাচ্ছে, যা Low Earth Orbit (LEO)-এ, অর্থাৎ প্রায় ৫০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পরিচালিত হচ্ছে। এই পরীক্ষা মহাকাশে 'রেনডেজভু ও প্রক্সিমিটি অপারেশন (RPO)' নামে পরিচিত।

এই মিশনের মূল বৈশিষ্ট্য কী?

এই পরীক্ষায় দুটি উপগ্রহ ব্যবহৃত হচ্ছে—একটি ‘চেইজার’ (chaser) এবং অন্যটি ‘টার্গেট’ (target) স্যাটেলাইট। চেইজার স্যাটেলাইটটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে থাকা টার্গেট স্যাটেলাইটকে মহাকাশে ট্র্যাক ও অনুসরণ করছে, কৌশলগতভাবে তার কাছাকাছি গিয়ে ভৌগোলিক ও কক্ষীয় অবস্থান মূল্যায়ন করছে। এই প্রযুক্তিগত অনুশীলনকে অনেকটা যুদ্ধবিমানের ‘ডগফাইট’ কৌশলের সাথে তুলনা করা যায়, যেখানে একটিকে অন্যটির গতি ও অবস্থান ধরে রাখতে হয় অতি সূক্ষ্মভাবে।

এর প্রযুক্তিগত তাৎপর্য কী?

এই ধরনের RPO মিশন পরিচালনার ক্ষমতা শুধুমাত্র কয়েকটি উন্নত মহাকাশ গবেষণা সংস্থার মধ্যেই সীমাবদ্ধ—যেমন NASA, Roscosmos, ESA এবং CNSA। ISRO-এর এই সাফল্য প্রমাণ করে দিয়েছে যে ভারত এখন এই অত্যন্ত জটিল ও কৌশলগত মহাকাশ প্রযুক্তির দৌড়ে অন্যতম প্রতিযোগী।

এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতে ISRO পারবে:

কক্ষপথে নষ্ট বা বিকল হয়ে যাওয়া স্যাটেলাইট মেরামত করতে

জ্বালানি পুনঃভরণ (in-orbit refueling) করতে

মহাকাশের ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশ বা আবর্জনা (space debris) সংগ্রহ ও অপসারণ করতে

ভবিষ্যতের সার্ভিসিং বা রিপ্লেসমেন্ট মিশনে যুক্ত হতে


ভারতের মহাকাশ অভিযানে এক নতুন অধ্যায়

এই সাফল্য শুধু প্রযুক্তিগত নয়, কৌশলগতও। ভবিষ্যতের মহাকাশ যুদ্ধ, সম্পদ দখল বা স্যাটেলাইট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। মহাকাশ এখন শুধু গবেষণার স্থান নয়, জাতীয় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের মঞ্চও। এই মাইলফলক ISRO-কে সেই স্তরে পৌঁছে দিয়েছে, যেখানে গুটি কয়েক দেশই এখনো যেতে পেরেছে।

বিশ্বের নজর এখন ভারতের দিকে—আর ISRO এগিয়ে চলেছে তার নিজস্ব কক্ষপথে, অতুলনীয় গতি ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে।

#ISRO #IndiaInSpace  #SatelliteDogfight 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন